ঢাকা, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১

সরকার পতনের পর প্রথম দিন অফিসে এসেই অবরুদ্ধ সিমেবি ভিসি

সিলেট সংবাদদাতা

 প্রকাশিত: নভেম্বর ০৭, ২০২৪, ০১:০০ দুপুর  

শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর প্রথম দিন অফিসে এসেই অবরুদ্ধ সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিমেবি) ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে আসলে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বেলা সাড়ে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক চলে বলে খবর পাওয়া গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে লাপাত্তা ছিলেন ভিসি অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন। বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করেও দেখা মেলেনি তার। তাদের দাবি, আজ বৃহস্পতিবার সকালে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কয়েক নেতাকর্মী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে গুরুত্বপূর্ণ নথি নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছেন তারা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদ সভাপতি আব্দুস সামাদ চৌধুরী বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক বলতে কেউ নেই। ভিসি, রেজিস্ট্রার ও কোষাধ্যক্ষ তিনজনই লাপাত্তা। যুবলীগ-ছাত্রলীগকে নিয়ে ভিসি ক্যাম্পাসে আসার খবর পেয়ে সবাই অবস্থান নিয়েছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বৈঠক চলছে।

২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। পরে নাম পাল্টে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নামকরণ করে আওয়ামী লীগ সরকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ভিসি ডা. মুর্শেদ আহমদ চৌধুরী ও রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নঈমুল হক চৌধুরী নিয়োগ বাণিজ্যসহ ব্যাপক জালিয়াতি করেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে মেয়াদ শেষ হলে প্রথমে চাকরি হারান রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নঈমুল হক চৌধুরী। এরপর একই পথে যেতে হয় ভিসি ডা. মোর্শেদ আহমদ চৌধুরীকে। প্রথম ভিসির মেয়াদ শেষে ২০২৩ সালের শুরুতেই দ্বিতীয় ভিসি হিসেবে নিয়োগ পান স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন। তিনি যোগ দেওয়ার আগে আগের উপাচার্যের অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা স্থগিত করার নির্দেশনা দেয় মন্ত্রণালয়। এরপর ২২ মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো বেতন-ভাতা পাননি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। নিয়োগের পর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা দূর করার আশ্বাস দেন ভিসি ডা. এনায়েত। কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের প্রায় দুই বছর হলেও এসবের কোনো কিছুই করেননি তিনি। উল্টো কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্য থেকে নিজের পছন্দমতো বিভিন্ন পদে নতুন করে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দেন। আগের ভিসির মতো তার বিরুদ্ধেও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় সৃষ্ট জটিলতা ও বকেয়া বেতনের দাবিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর থেকে উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও কোষাধ্যক্ষ তিনজনই লাপাত্তা। গত মাসে পদত্যাগ করেছেন রেজিস্ট্রার আবুল কালাম মো. ফজলুর রহমান। তার বিরুদ্ধেও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

দৈনিক সরোবর/কেএমএএ