ঢাকা, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১

তিস্তাসহ আন্তঃসীমান্তবর্তী নদীর পানি বণ্টনে দ্রুত চুক্তি চায় ঢাকা

সরোবর প্রতিবেদক  

 প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৩, ০৮:৪৩ রাত  

ঢাকায় অনুষ্ঠিত ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বৈঠক প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, অনিষ্পন্ন ইস্যু নিষ্পত্তির বিষয়ে ভারতের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে তিস্তাসহ সব আন্তঃসীমান্তবর্তী নদীর পানি বণ্টনের বিষয়ে দ্রুত চুক্তি সম্পাদনে দেশটির নিবিড় সহযোগিতা প্রত্যাশা করে ঢাকা। 

তিনি বলেছেন, সীমান্ত হত্যা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। এটিকে শূন্যে নামিয়ে আনতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এ বিষয়ে ভারত সরকার উদ্যোগ নেবে বলে আমরা প্রত্যয় ব্যক্ত করেছি।

বুধবার এফওসি বৈঠকে এসব আলোচনা হয়। দুই বছর পর ঢাকায় অনুষ্ঠিত এফওসিতে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা। 

বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, এফওসিতে দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, বাংলাদেশের সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশী ও গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু হিসেবে ভারতের কাছে যেসব অনিষ্পন্ন ইস্যু রয়েছে, সেগুলো নিষ্পত্তির বিষয়ে তাদের সহায়তা কামনা করি। এ লক্ষ্যে আমরা একযোগে কাজ করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করি।

পররাষ্ট্র সচিব জানান, তিস্তাসহ সব আন্তঃসীমান্তবর্তী নদীর পানি বণ্টনের বিষয়ে দ্রুত চুক্তি সম্পাদনের ওপর গুরুত্ব পুনব্যর্ক্ত করি। বিষয়টি সমাধানের জন্য ভারতের নিবিড় সহযোগিতা প্রত্যাশা করেছি।

সেইসঙ্গে গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে সই করা চুক্তি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নিতে ভারতকে বলেছি।

ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, তিস্তা ইস্যু নিয়ে অনেক আগে থেকেই ভারতের ফেডারেল ও স্টেট সরকারের মধ্যে সমস্যা রয়েছে। আমরা তিস্তার পানিবণ্টন ও কুশিয়ারা চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।

এক প্রশ্নের জবাবে মাসুদ বিন মোমেন জানান, আদানির বিদ্যুৎ আনার বিষয়ে   আলাদা করে আলাপ হয়নি। তবে বিদ্যুতের ট্রান্সমিশন লাইন নিয়ে আলাপ হয়েছে।

তারা নেপাল-ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আনতে সহযোগিতা করবেন। তবে তারা বলেছেন, আমাদের ট্রান্সমিশন লাইনের ক্যাপাসিটি বাড়াতে হবে। আমরা এটা লাইন মিনিস্ট্রির সঙ্গে আলাপ করবো।

পররাষ্ট্র সবিচ বলেন, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে ট্যারিফ বাধা দূর করতে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া সেপা চুক্তি দ্রুত করতে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি-বিএসএফের ভূমিকা  বাড়ানো নিয়েও আলাপ হয়েছে। তাহলে সীমান্ত হত্যাও কমে আসবে।

মাসুদ বিন মোমেন আরো বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে বিদ্যমান সম্পর্ক নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছাবার্তা প্রধানমন্ত্রীকে পৌঁছে দিয়েছেন।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় আসেন। ঢাকা সফরকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন।

ঢাকায় এফওসি বৈঠকে অংশ নেন বিনয় মোহন কোয়াত্রা। ২০২১ সালের ২৯ জানুয়ারি ভারতের নয়াদিল্লিতে এফওসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১ মে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটাই বিনয় মোহন কোয়াত্রার প্রথম বাংলাদেশ সফর।