ঢাকা, সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১

তসলিমা নাসরিনকে কলকাতায় ফেরানোর দাবি

সরোবর ডেস্ক

 প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২৫, ০৫:২৭ বিকাল  

ভারতে বসবাসকারী নির্বাসিত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন যাতে কলকাতায় ফিরতে পারেন, আজ সেদেশের পার্লামেন্টে সেই দাবি জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের একজন বিজেপি সাংসদ।

এর মাধ্যমে দীর্ঘ আঠারো বছর পর আবার ভারতের পার্লামেন্টে লেখিকাকে কলকাতায় ফেরানোর দাবি উঠল।

পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা তথা রাজ্যসভার সদস্য শমীক ভট্টাচার্য এদিন সভায় বলেন, বাকস্বাধীনতার স্বার্থেই তসলিমা নাসরিনকে তার ‘প্রাণের শহর’ কলকাতায় ফিরতে দেওয়া উচিত – যাতে তিনি পশ্চিমবঙ্গে বসেই বাংলায় সাহিত্যচর্চা ও লেখালেখি করতে পারেন।

প্রসঙ্গত, এই সহস্রাব্দের গোড়ার দিকে কলকাতায় বসবাস শুরু করলেও ২০০৭ সালে তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে কয়েকটি সংগঠন বিক্ষোভ দেখালে রাজ্যের তদানীন্তন বামফ্রন্ট সরকার তাকে কলকাতা ছাড়ার নির্দেশ দেয়।

তারপর থেকে তসলিমা মূলত রাজধানী দিল্লিরই বাসিন্দা, যদিও মাঝে মাঝে তিনি লম্বা সময় পশ্চিমের বিভিন্ন দেশেও কাটান।

শমীক ভট্টাচার্য এদিন রাজ্যসভায় বলেন, ২০০৭ সালে তখনকার একজন কংগ্রেস নেতার কারসাজিতেই তসলিমা নাসরিনকে রাজ্যছাড়া হতে হয়েছিল। পরে সেই নেতাকে কংগ্রেস বহিষ্কার করলে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন এবং তৃণমূল তাকে পার্লামেন্টেও পাঠায়।

সেই তৃণমূলই এখন পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় গত চোদ্দ বছর ধরে, কিন্তু কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গের জন্য তসলিমা নাসরিনের দরজা এখনও বন্ধ।

পার্লামেন্টে শমীক ভট্টাচার্যের এই বক্তব্যের পর তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তসলিমা নাসরিন এদিন একটি ফেসবুক পোস্টও দিয়েছেন।

তসলিমা সেখানে লেখেন, বাংলার টানে, প্রাণের টানে যে শহরে বসবাস শুরু করেছিলাম, সেই শহর থেকে কখনও যে বিতাড়িত হবে হবে, কল্পনাও করিনি। শ্রদ্ধেয় গুরুদাস দাশগুপ্ত প্রতিবাদ করেছিলেন। তিনি দাবি জানিয়েছিলেন আমাকে যেন পশ্চিমবঙ্গে ফিরতে দেওয়া হয়। তারপর দীর্ঘ বছর কোনও রাজনীতিক আমার কলকাতায় ফেরা নিয়ে কোনও কথা বলেননি।

জানিনা, কলকাতায় শেষ পর্যন্ত আমার ফেরা হবে কি না, তবে শমীক ভট্টাচার্য যে আমার কথা মনে করেছেন, মানবাধিকারের পক্ষে দাঁড়ানোর অপরাধে নিজের জন্মভূমি থেকে নির্বাসিত আমি, বাংলায় লেখালেখি চালিয়ে যেতে হলে পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি পরিবেশে বাস করা আমার জন্য যে গুরুত্বপূর্ণ, তা তিনি উপলব্ধি করেছেন বলে তাঁকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।

তবে তসলিমা নাসরিনের কলকাতায় ফেরা সম্ভব হবে কি না, সেটা মূলত নির্ভর করছে পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জীর নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের ওপরেই – কারণ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়টি রাজ্যেরই এখতিয়ারে। তথ্যসূত্র: বিবিসি নিউজ বাংলা

দৈনিক সরোবর/এএস