ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১

মিমকে আটকালেন ডিবি হারুন, সহযোগিতায় জায়েদ খান

বিনোদন ডেস্ক

 প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪, ০৯:০২ রাত  

নির্মাতা  সুমন ধর ১৯৯৫ সালের ২৩ আগস্টের ঘটে যাওয়া একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে সিনেমা তৈরির কাজ করছিলেন। প্রধান চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল বিদ্যা সিনহা মিমের। অপেক্ষা শুধু শুটিংয়ের। এর মধ্যে তৎকালীন ডিবি-প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ ওরফে ডিবি হারুন এই গল্পে সিনেমা নির্মাণ করা যাবে না বলে নির্মাতাকে আটকিয়ে দেন। একই সঙ্গে মিমকেও কল করে থামিয়ে দেন ডিবি হারুন। এর এসব কাজে হারুনের সহযোগী ছিলেন আরেক আলোচিত-সমালোচিত নায়ক জায়েদ খান।  

পরিচালক সুমন ধর জানিয়েছেন, ছবিটির কাজ আটকে দিয়েছিলেন তখনকার (২০২৩) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ। নির্মাতা জানান, একদিন অচেনা একটি ফোন নম্বর থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন ডিবি হারুন। তবে সেটি নায়ক জায়েদ খানের মাধ্যমে। পরে জায়েদ খানই সুমনকে নিয়ে গিয়েছিলেন হারুনের ডিবি কার্যালয়ে।

সুমনের ভাষ্যে, ফোন করে জায়েদ ভাই (জায়েদ খান) আমাকে বললেন, আপনাকে আমার সঙ্গে একটু হারুন ভাইয়ের ওখানে যেতে হবে। কেন যেন আপনাকে ডাকছেন। আমি যেহেতু চলচ্চিত্রের মানুষ, তাই আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। পরদিন আমি গেলাম, কয়েক মিনিটের ব্যবধানে জায়েদ ভাইও ঢুকলেন। দেখলাম হারুন সাহেব তার রুমে বসা। তার টিমও আছে। সালাম দেওয়ার পর আমাকে প্রশ্ন করলেন, ‘কী অবস্থা? শুনলাম, আপনি একটা সিনেমা করছেন, আমি ইয়াসমিন বলছি?’ বললাম, হ্যাঁ করছি। তিনি বললেন, এটা নিয়ে অনেক কথাবার্তা আছে। এই ছবি আসলে করা যাবে না। আমাদের এখানে বড় বড় আরো শক্তিশালী গল্প আছে। ওগুলো আপনাকে দিই, সেখান থেকে করেন।

এরপর সুমন ডিবি হারুনকে বলেন, এই ছবির পেছনে আমি অনেক পরিশ্রম করেছি। সেই ২০১৭ সাল থেকে লেগে আছি। যেহেতু সত্যি গল্প, সিনেমার মধ্যে যেন সবটুকু সঠিকভাবে উঠে আসে, তার জন্য অনেক গবেষণা করতে হয়েছে। নিজেরও টাকা বিনিয়োগ আছে, প্রযোজকেরও আছে। সবচেয়ে বড় কথা, ছবিটা বানাবো বলেই ওই সময় নাটক বানানো কমিয়ে দিই। টুকটাক যে বিজ্ঞাপনচিত্র বানাতাম, তা-ও বন্ধ করে দিই। ছবিটা না হলে অর্থনৈতিকভাবে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হব। নাছোড়বান্দা হারুন ভাই এটুকু বললেন, এই ছবি করা যাবে না। তিনি যে আমার সঙ্গে খুব রাগী গলায় কথা বলেছেন, তা নয়। এরপর তার সহকারীকে ডেকে বললেন, আমাদের কাছে ভালো ভালো গল্প আছে, সেগুলো সুমনের সঙ্গে শেয়ার করেন। সুমন যেটা পছন্দ করবেন, সেটা করবেন। আর সুমনের যদি স্পন্সর প্রয়োজন হয়, আমরা জোগাড় করে দেবো।

নির্মাতাকে ডেকে নিয়েই শেষ করেননি ডিবি হারুন। সিনেমাটি না করার জন্য নায়িকা মিমকেও ফোন করেন ডিবি হারুন। 

মিমের ভাষ্যে, হোয়াটসঅ্যাপে কল দেখে একটু ঘাবড়ে যাই। তিনি (হারুন-অর-রশীদ) কেন আমাকে ফোন করবেন? ভাবতেও পারিনি যে আমার কাছে এমন একটি ফোনকল সেদিন আসবে আর বলা হবে যে ছবিটিতে অভিনয় করতে পারবো না! যখন তিনি বললেন, ‘তোমার পরিচালক আমার সামনে বসা’, তখন বুঝতে বাকি থাকেনি যে ছবিটা বোধহয় আর হবে না। পরিচালক বের হওয়ার পর তাকে (সুমন ধর) ফোন করে আবার নিশ্চিত হই। সব মিলিয়ে মনটা খুব খারাপ হয়। শিল্পীর জীবনে চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ সবসময় আসে না। আসার পর যখন আবার তা থেকে বঞ্চিত হতে হয়, তখন মন খারাপ হয়।

এদিকে আশার কথা শোনালেন নির্মাতা সুমন ধর। বললেন- ‘আমি ইয়াসমিন বলছি’র শুটিং শুরু করবেন শিগগিরই। নায়িকা হিসেবেও থাকছেন মিমই।

দৈনিক সরোবর/এমই