শিক্ষার্থীর উত্তরপত্রের ছবি পোস্ট
জবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে এখনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন
প্রকাশিত: নভেম্বর ০৩, ২০২২, ০৯:২০ রাত

ছবি: প্রতিনিধি
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীর উত্তরপত্রের ছবি পোস্ট করে আলোচনার জন্ম দেওয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষকের ব্যাপারে এখনো কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তার কাজটিকে নীতিবহির্ভূত ও বেআইনি কাজ হয়েছে বলে জানিয়েছে বিভাগের শিক্ষকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট দফতর।
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. শওকত জাহাঙ্গীর নিজের ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে উত্তরপত্রের দুইটি ছবি আপলোড করে পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লিখেন, ‘মাস্টার্স পর্যায়ের মিড-টার্ম পরীক্ষার উত্তরপত্র। হাতের লেখা বেশ ভালো কিন্তু ভিতরে পড়ে আমি হতবাক! হতাশ মনটা ভালো করার জন্য উত্তরপত্র মূল্যায়নে বিরত থাকলাম।’
পরে শনিবার (২৯ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে পোস্টটি সম্পাদনা করে লেখা হয়, ‘মাস্টার্স পর্যায়ের (প্রাইভেট/পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইভনিং প্রোগ্রামের ছাত্রের) মিড-টার্ম পরীক্ষার উত্তরপত্র…।’ পরে পোস্টটি তিনি সরিয়ে নেন।
বিষয়টির ব্যাপারে ২রা নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ ইমদাদুল হক জানান, এখনো তার সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ হয়নি। সাক্ষাৎ হলে তার সাথে বসে কথা বলবো। তবে তার কাজটি সম্পূর্ণ নীতিবহির্ভূত হয়েছে। তার সাথে বসলে বুঝতে পারবো তিনি কোন উদ্দেশ্যে কাজটা করেছেন।
উক্ত বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. শফিকুল ইসলাম তবে তিনি আকার ইঙ্গিতে বুঝাতে চেয়েছেন তার কাজটি ঠিক হয়নি। তিনি শুধু এতটুকুই বলেছেন যে একটা টাইটানিক ডুবাতে একটা ছিদ্রই যথেষ্ট আর সেই কাজ ই তিনি করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জবি অধ্যাপক জানান, একজন বাবা মা যেমন তার সন্তানকে সকলের সামনে অপমান করতে পারেন না তেমনি একজন শিক্ষকও তার ছাত্রের খাতা এভাবে প্রকাশ করতে পারেন না সেটা যার খাতাই হোক না কেন। তিনি নীতিবহির্ভূত কাজ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়কে ছোট করেছেন এ জন্য প্রশাসনের উচিত সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া।
শিক্ষার্থীরা জানান, তার এই কাজটা অসম্পূর্ণ অন্যায় হয়েছে একজন ছাত্র যদি এমন কাজ করে শাস্তি পেতে পারে তাহলে শিক্ষক কেন নয়?
এবিষয়ে মুঠোফোনে জবি অধ্যাপক ড. মোঃ শওকত জাহাঙ্গীর জানান, আমি বরাবরই বলতেছি আমি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ করিনি। আমি এটির মাধ্যমে পলিসি মেকারদের একটি মেসেজ দেওয়ার চেষ্টা করেছি, আমাদের শিক্ষার মান কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তা বুঝানোই ছিল উদ্দেশ্য। যদি মেসেজ দিতে চাইতেন তাহলে তাকে ব্যক্তিগতভাবে ডেকেও মেসেজ দেওয়া যেত এই প্রশ্নোত্তরে তিনি বলেন যদি এমন হতো তাহলে বিষয়টি এত আলোচনা হতো না।
অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আলী নূর বলেন, ব্যাপারটা সত্যি ভালো একটা বিষয় নয়। তিনি যদি সত্যি একটা বার্তা দেওয়ার জন্য এই কাজ করে থাকতেন তাহলে ত সবার সাথে বসে গবেষণা করে আরো ভালোভাবে কাজটি করতে পারতেন এমন প্রশ্নোত্তরে তিনি একমত পোষণ করেন বলেন হ্যা এভাবে তিনি করতে পারতেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম সেমিস্টারের এক শিক্ষার্থী up অতিরিক্ত উত্তরপত্রে ‘স্যার আজকে আমার মন ভালো নেই’ লিখে সেই ছবি ফেইসবুক পোস্ট করে শাস্তির মুখে পড়েছিলেন।
দৈনিক সরোবর/আরএস