ঢাকা, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১

রয়েই গেছে পেঁয়াজে ‘ঝাঁজ’, কমেনি মরিচের ‘ঝাল’

সরোবর প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: জুলাই ০৭, ২০২৩, ০১:১৬ দুপুর  

বাজারে কাঁচা মরিচের অতিরিক্ত দামে নাজেহাল হচ্ছেন খুচরা পর্যায়ের ক্রেতারা। ভারত থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে মরিচ আমদানি করা হলেও এখনও ভোক্তা পর্যায়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে। 

ভোক্তা অধিদপ্তরের নজরদারির তোয়াক্কা না করেই এখনও অস্থিতিশীল রয়েছে কাঁচা মরিচের দাম। অপরদিকে ৪০ টাকা দরের ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। এছাড়া গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ ৬০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এখন ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। 

শুক্রবার রাজধানীর বাসাবো মাদারটেক কাঁচাবাজার ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। 

বেশিরভাগ পণ্যের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ২৩০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া আদা এ সপ্তাহে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, ৬০ টাকা দরের লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজিতে। গত সপ্তাহে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। ১২০ টাকা কেজি দরের ছোট সাইজের রসুন এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা কেজি দরে। তবে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া বড় সাইজের রসুনের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে৷ 

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাঝারি মানের প্রতিটি চাল কুমড়া ৫০ টাকায়, মাঝারি মানের ফুলকপি ৫০ টাকা, ঢেড়স ৪০ টাকা, উস্তা ৮০ টাকায় ও মূলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। 

এদিকে ফার্মের মুরগির লাল ডিম ১৪৫ টাকা ডজন, কিছুটা আকারে ছোট ডিম ১৪০ টাকা ডজন। গত সপ্তাহে সাইজভেদে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে ডিম। এছাড়া গত সপ্তাহে ফার্মের সাদা ডিম ১২৫ টাকা ডজন বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ১৪০ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে। দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে কিছুটা কমে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, আকারে ছোট চিংড়ি গত সপ্তাহে ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আকারের চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে। আকার ও মানভেদে পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে। তবে গত সপ্তাহে ৩০০ টাকা কেজি দরে এসব মাছ পাওয়া গেছে। রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে। মাঝারি মানের পাঙ্গাস বিক্রি করা হচ্ছে ২২০ টাকা কেজি দরে। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া গরুর মাংস আগের মতোই ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কাঁচা মরিচ বিক্রেতা বলেন, পাইকারি বাজারে আমরা অতিরিক্ত দামে মরিচ কিনে এনেছি। ৩২০ টাকায় মরিচ কিনতে হলে ভাড়া এবং সব খরচ মিলে ৩৫০ টাকায় বিক্রি তো হবেই। কখনও কখনও লোকসান হলেও আমরা ৩০০ টাকায় মরিচ বিক্রি করছি। দাম বাড়লে আমাদের সাথে কথা বলে লাভ নেই। আড়ৎদারদের সিন্ডিকেটেই সব হয়। 

পেঁয়াজ বিক্রেতা বলেন, পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়তি। খোলা বাজারে এমন হবেই। দাম বাড়বে-কমবে। তবে পেঁয়াজের দাম কিছুদিন ধরেই বেশি চলছে। বেশি দামে পেঁয়াজ কিনলে বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়। আমাদের কিছুই করার নেই।  

বাজার করতে আসা এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, সবকিছুতেই অতিরিক্ত দাম। বাজার করতে আসার আগে যে পরিকল্পনা থাকে বাজারে এসে তা ভেস্তে যায়। লিস্ট লম্বা থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় অনেক হিসাব করে পরিমাণে কম নিয়ে বাজার করতে হচ্ছে। প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়তি। সরকার বোতলজাত গ্যাসের দাম কমালেও আমি গতকাল ১২০০ টাকাতে কিনেছি। এই কাঁচা বাজারেও একই অবস্থা। ৩৫০ টাকা এখনো মরিচের দাম। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৭৫ টাকায়। 

আরেক ক্রেতা বলেন, বাজারে এলেই ঘাম ছুটে যায়। সবকিছু কিনতে পারি না। সব জিনিসের অতিরিক্ত দাম। সবকিছুর দাম বাড়লেও আমার বেতন তো বাড়েনি। মাংসের যে দাম তাতে আমার মতো মানুষের মাংস খাওয়া এখন বিলাসিতা। কিছুই বলার নেই। দাম বাড়ে আর আমরা কিনে খাই। এভাবেই চলছে। কিছুই ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নেই।