ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৭ আশ্বিন ১৪৩২

‘জনগণের পক্ষের রাজনীতিবিদ কখনও পালায় না’

সরোবর প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৫, ১০:২৪ দুপুর  

জনগণের পক্ষের কোনো রাজনীতিবিদ কখনও পালায় না বলে মন্তব্য করেছেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আপনার দেখেছেন এতো উৎপীড়ন এতো অত্যাচার এতো বন্দিত্ব.. তারপরও খালেদা জিয়া তার জনগণ আর দেশে ছেড়ে যাননি। এটাই হলো পার্থক্য বিএনপির সাথে তাদের। 

শুক্রবার সকালে শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের স্মরণে জাতীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন তিনি। 

রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে, ক্রসফায়ারের শিকার করা হয়েছে, তাদের রক্তাক্ত পথ পেরিয়ে চূড়ান্ত যে আন্দোলন, মহাবিপ্লব জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হয়েছে, তার মধ্যে দিয়ে সেই ভয়ঙ্কর উৎপীড়ক এবং রক্তপিপাপু স্বৈরাচার পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। 

তিনি আরো বলেন, আমরা একটা ধাপ অতিক্রম করেছি, স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। এখন গণতন্ত্রের পথে যাওয়ার জন্য আমরা সেই পথ দিয়ে হাঁটছি। আমরা আমাদের দাবিগুলো বলছি। দাবিগুলো যে একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে এবং সর্বাগ্রে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে। কারণ বিগত ১৭ বছর রাজনৈতিক শক্তি এবং রাজনৈতিক দলকে ধ্বংস করার চেষ্টা চলেছে। আমরা আশা করি অন্তর্বর্তী সরকার সেই রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার জন্যই আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেবে। 

তিনি আরো বলেন, আমরা বারবার বলেছি আপনারা সংস্কার করবেন কিন্তু একটি সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে, সেটা আপনারা শেষ করবেন, সংসদ নির্বাচনের দিকে আপনারা এগোবেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, একটি গণতান্ত্রিক বিশ্বাসী দল ক্ষমতায় থাকলে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন স্থানীয় সরকারে হওয়া সম্ভব। জাতীয় না স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে— এই বিতর্ক করে জাতীয় সরকারকে পিছিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। জনগণ নিরপেক্ষ ভোটের মাধ্যমে যে সরকার গঠন করবে তারাই নির্ধারণ করবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন বা অন্যান্য নির্বাচন কখন হবে।

তিনি বলেন, লড়াইতো শুধু রাস্তাঘাটে লড়াই করা না, আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য লড়াই করতে হবে। আমরা যাতে আইনের শাসন, মানবিক সাম্য, ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে পারি, সুবৃহৎ গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে চাই, তাহলে আমাদের এই শর্তগুলোকে নিশ্চিত করতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এই সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করা, তার সঙ্গে আরো কিছু আনুষঙ্গিক কাজ আছে, সংস্কার আছে, যেটা প্রয়োজনীয় সংস্কার, যে সময় আছে সে সময়েই করা সম্ভব। কিন্তু জনগণকে আশ্বস্ত করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আজকে যাদের ১৮ বছর বয়স, ২১ বছর বয়স তারা কেউ ভোট দিতে পারেনি। তারা ভোট কি জানে না। কারণ ১৭ বছর দিনের ভোট রাতে হয়েছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে ধ্বংস করেছে। ভোট ধ্বংস করেছে। জনগণকে আশ্বস্ত করার জন্যই একটি অবাধ, সুষ্ঠু, ইনক্লুসিভ, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে। এটা সরকারের দায়িত্ব।

রিজভী বলেন, আমাদের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে সাহস যুগিয়েছে ২১ ফেব্রুয়ারি। আমরা এই পথ ধরেই নব্বই অর্জন করেছি। এরশাদের মতো ঘৃণ্য স্বৈরশাসকের পতন ঘটানো হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় জনগণের কাঁধের ওপর ভয়ংকর অত্যাচার করে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ১৭ বছর ক্ষমতা দখল করে ছিলেন সেই রক্তপিপাসুও পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় ৫ আগস্ট। ওগুলো সব কিছুতেই ২১ ফেব্রুয়ারি প্রেরণা যুগিয়েছে, উদ্বুদ্ধ করেছে।

দৈনিক সরোবর/এএস