ঢাকা, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১

হজের আটটি রীতির ইতিহাস

 সরোবর ডেস্ক

 প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২৪, ১২:১৬ দুপুর  

মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় জমায়েত হজ। এটি ইসলাম ধর্মের পাঁচটি মৌলিক ভিত্তির একটি, যা শারীরিক ও আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান প্রতিটি মুসলমানের জন্য ফরজ বা অবশ্য পালনীয় একটি কর্তব্য। আর সেই কারণেই মুসলিম বিশ্বের লাখ লাখ নারী-পুরুষ প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট সময়ে হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে সমবেত হন।

আরবি বছরের সর্বশেষ মাস জিলহজকে বলা হয় হজের মাস। কারণ ওই মাসের আট থেকে বারো তারিখ পর্যন্ত হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হয়ে থাকে। এসময় হজ সম্পন্ন করতে একজন মুসলমানকে বেশ কিছু রীতি-নীতি পালন করতে হয়। সেসব রীতি-নীতির মধ্যে রয়েছে: হজের উদ্দেশ্যে বিশেষ পোশাক পরিধান করে মক্কায় প্রবেশ, কাবাঘরের চারপাশে হাঁটা, আরাফাত ময়দানে অবস্থান, সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মাঝখানে দৌড়ানো, শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ, পশু কোরবানি, কেশ মুণ্ডন বা মাথা ন্যাড়া করা ইত্যাদি।
মুসলিম পণ্ডিতরা বলছেন, ইসলাম ধর্মের আগেও শত শত বছর ধরে প্রায় একই রীতিতে মক্কায় হজ পালিত হতো।

তাহলে হজে পালন করা রীতিগুলো কখন, কীভাবে শুরু হয়েছিলো? রীতিগুলোর পেছনের ঘটনা এবং অর্ন্তনিহিত তাৎপর্যই-বা কী? ইহরামে সাদা কাপড় পরিধান: হজ পালনের ক্ষেত্রে প্রথম যে রীতিটি পালন করতে হয়, সেটি হচ্ছে- ইহরাম। মক্কা থেকে দূরে যাদের বাড়ি তাদের মক্কা যাওয়ার পথে একটি নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে ইহরাম সম্পন্ন করতে হয়। আরবি ‘ইহরাম’ শব্দের মাধ্যমে এমন একটি অবস্থাকে বোঝানো হয়, যেখানে একজন মানুষ সব ধরনের পাপাচার ও নিষিদ্ধ কর্মকাণ্ড থেকে নিজেকে দূরে রাখেন।

‘সহজ ভাষায়, ইহরাম হচ্ছে হজের জন্য নিয়ত করা এবং সেজন্য নির্দিষ্ট পোশাক পরিধান করা’-বিবিসি বাংলাকে বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক ড. মুহাম্মদ ওমর ফারুক। বিশেষ এই পর্যায়কে প্রতীকী রুপে তুলে ধরার জন্য পুরুষ হাজীদের ক্ষেত্রে সেলাইবিহীন দু’খণ্ড সাদা কাপড় পরার বিধান রাখা হয়েছে। -কানাডার ইসলামিক ইনফরমেশন অ্যান্ড দাওয়াহ্ সেন্টারের সাবেক প্রেসিডেন্ট ড. সাবির আলীএক সাক্ষাৎকারে বলেন, এটি দেখতে অনেকটাই কাফনের কাপড়ের মতো। কাজেই ইহরামের সময় এরকম একটি কাপড় পরার মাধ্যমে এটিই বোঝানো হয় যে, আমরা সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রস্তুত। পুরুষদের ক্ষেত্রে সাদা কাপড় পরার বিধান থাকলেও নারীদের ক্ষেত্রে সে ধরনের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। তারা চাইলে যে কোনও রঙের ঢিলেঢালা পোশাক পরতে পারেন। মুসলিম পণ্ডিতরা বলছেন, নবী ইব্রাহীম, যিনি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের কাছে আব্রাহাম নামে পরিচিত, তিনিই আরবে প্রথম হজ পালন শুরু করেছিলেন।
‘কাবাঘর নির্মাণের পর হযরত ইব্রাহীম (আঃ) আল্লাহর নির্দেশে হজ পালন শুরু করেছিলেন এবং তখনই সাদা কাপড় পরাসহ হজের যাবতীয় রীতি-নীতি চালু করা হয়’-বিবিসি বাংলাকে বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফারুক।

চুল-নখ না কাটা: ইহরাম বাঁধার পর থেকে হজ শেষ করার আগ পর্যন্ত হাজীদের বেশকিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে: ঝগড়া-বিবাদ না করা, যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকা, চুল-দাড়ি না কাটা, হাত-পায়ের নখ না কাটা, প্রাণি হত্যা বা রক্তপাত না করা, পরনিন্দা বা পরচর্চা থেকে বিরত থাকা ইত্যাদি।
সাদা কাপড় পরার মতো এগুলোও নবী ইব্রাহীমের সময় চালু হয়েছিল বলে মনে করেন মুসলিম পণ্ডিতরা। ‘এর মাধ্যমে বোঝানো হয় যে, হজের সময় আমরা সৃষ্টিকর্তার নৈকট্যলাভের আশায় আমরা এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছাই, যেখানে রুপচর্চার মতো জাগতিক মামুলি বিষয়গুলোর প্রতি নজর দেওয়ার মতো বাসনাও আমাদের জাগে না’-বলেন কানাডার ইসলামিক ইনফরমেশন অ্যান্ড দাওয়াহ্ সেন্টারের সাবেক প্রেসিডেন্ট ড. সাবির আলী।

কাবার চারপাশে প্রদক্ষিণ: ইহরামের পর হজ পালনের দ্বিতীয় আনুষ্ঠানিকতাটি হচ্ছে ইসলামের পবিত্রতম স্থান কাবাঘরের চারপাশে সাতবার প্রদক্ষিণ করা। ঘড়ির কাঁটার উল্টো দিক থেকে সাধারণত পায়ে হেঁটেই হাজীরা কাবাঘর তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করে থাকেন। এই রীতিটিও নবী ইব্রাহীমের সময় চালু হয়েছিল বলে মনে করেন মুসলিম পণ্ডিতরা। তবে কেন ঘড়ির কাঁটার উল্টো দিক থেকে হাঁটা হয় এবং সংখ্যাটি কেন সাত, সে বিষয়ে পরিষ্কার কোনও ব্যাখ্যা নেই বলে জানাচ্ছেন তারা।

‘সৃষ্টিকর্তাই এর পেছনের প্রকৃত কারণ ও রহস্য ভালো জানেন’-লেট দ্য কোরান স্পিক’ শো-তে বলেন মুসলিম পণ্ডিত ড. সাবির আলী। তবে ইসলামি ধর্মতত্ত্ববিদদের কেউ কেউ মনে করেন যে, জান্নাতে বাইতুল মামুর নামের পবিত্র যে ঘরটির চারপাশে ফেরেশতারা প্রদক্ষিণ করে থাকেন, সেটির সঙ্গে কাবা তাওয়াফের সাদৃশ্য রয়েছে। ‘আর সে কারণেই কাবাকে বাইতুল্লাহ বা আল্লাহ’র ঘর বলা হয়ে থাকে। পবিত্র এই ঘরের চারপাশে সাতবার ঘুরে হাজীরা বোঝাতে চান যে, তারা সর্বতোভাবে সৃষ্টিকর্তার মুখাপেক্ষী’-বলেন আলী।

ইসলামপূর্ব যুগেও হজের এই অনুষঙ্গটি পালন করা হতো বলে জানাচ্ছেন ইসলামি চিন্তাবিদরা। ‘হয়রত ইব্রাহীম (আঃ) এর সময় থেকেই এটি ছিল’-বিবিসি বাংলাকে বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মুহাম্মদ ওমর ফারুক। ইসলামের নবীর যখন জন্ম হয় ততদিনে কাবা তাওয়াফের রীতিতে বেশ খানিকটা পরিবর্তন দেখা যায় বলে জানাচ্ছেন তারা। ‘সেই সময় আরবের লোকেরা উলঙ্গ হয়ে কাবা তাওয়াফ করতো বলে জানা যায়। পরবর্তীতে ইসলাম সেটি বন্ধ করে ইব্রাহীম (আঃ) প্রবর্তিত মূল রীতিতে পুনরায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়’- বিবিসি বাংলাকে বলেন ফারুক।

সাফা-মারওয়ার মাঝে দৌঁড়ানো: হজ পালনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হচ্ছে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে টানা সাতবার দৌড়ানো। ইসলাম ধর্মমতে, সৃষ্টিকর্তার হুকুমে নবী ইব্রাহীম তার স্ত্রী হাজেরা এবং শিশুপুত্র ইসমাইলকে মক্কার সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের কাছে রেখে আসেন। সেখানে একপর্যায়ে পানি শেষ হয়ে গেলে হাজেরা পানির সন্ধানে সাফা ও মারওয়া পাহাড় দু’টির মাঝখানের জায়গাটিতে সাতবার দৌড়ান। এরপর সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে সেখানে একটি কূপ তৈরি হয় এবং হাজেরা ও তার শিশুপুত্র সেখান থেকে পানি পান করে তৃষ্ণা মেটান। কূপটি পরবর্তীতে ‘জমজম কূপ’ নামে পরিচিতি লাভ করে। ‘হজে গিয়ে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের মাঝখানে সাতবার দৌড়ানোর মাধ্যমে ইসমাইল ও তার মা হাজেরার সেই ঘটনাটি প্রতীকী অর্থে তুলে ধরা হয়’- বলেন কানাডার ইসলামিক ইনফরমেশন অ্যান্ড দাওয়াহ্ সেন্টারের সাবেক প্রেসিডেন্ট ড. সাবির আলী।

আরাফাত ময়দানে অবস্থান: মিনায় রাত্রিযাপনের পর হজের দ্বিতীয় দিনে হাজীরা আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এরপর সেখানেই সারাদিন অবস্থান করে প্রার্থনা করা হজের গুরুত্বপূর্ণ একটি আনুষ্ঠানিকতা বলে মনে করা হয়। এরপর সন্ধ্যায় মুজদালিফার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে সেখানে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটান হাজীরা। মিনা থেকে মুজদালিফা পর্যন্ত যত কর্মকাণ্ড পালন করা হয়, সেগুলোর সঙ্গেও নবী ইব্রাহীম ও তার স্ত্রী-পুত্রের ইতিহাস জড়িত রয়েছে বলে মনে করেন মুসলিম পণ্ডিতরা। এছাড়া গরমে সারাদিন আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের পর মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করাও বিশেষ আধ্যাত্মিক গুরুত্ব রয়েছে বলেও জানাচ্ছেন তারা। ‘সৎ কাজ ব্যতিত দুনিয়ার ধন-সম্পদ, খ্যাতি ও প্রভাব-প্রতিপত্তি কোনও কিছুই যে শেষবিচারে আমাদের কাজে আসবে না, আরাফাত ও মুজদালিফায় অবস্থানের মাধ্যমে হাজীরা সেটি উপলব্ধি করতে পারেন’-বিবিসি বাংলাকে বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক ড. মুহাম্মদ ওমর ফারুক। একই সঙ্গে, হজের সময় আরাফাত ও মুজদালিফায় লাখ লাখ মানুষের এক সঙ্গে অবস্থান ইসলাম ধর্মে বর্ণিত ‘হাশরের ময়দান’ বা শেষ বিচারের দিনের কথা স্মরণ করিয়ে দেয় বলেও মনে করেন অনেকে।
 
শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ: হজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গের একটি হচ্ছে শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করা। মুজদালিফা থেকে আসার সময় হাজীরা কঙ্কর বা ছোট আকারের সাতটি পাথর কুড়িয়ে নিয়ে মিনায় আসেন। সেখানে শয়তানের নামে তৈরি প্রতীকী দেওয়াল রয়েছে, যেটি ‘বড় জামারাত’ নামে পরিচিত। হাজীরা কুড়িয়ে আনা সাতটি পাথর সেই দেওয়ালে নিক্ষেপ করে থাকেন। মিনাতে এরকম আরও দু’টি ‘শয়তানের দেওয়াল’ রয়েছে। হজের শেষ দু’দিনে সেগুলোতেও সাতটি করে পাথর মারা হয়।

‘শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে বাঁচতে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করেছিলেন। শয়তানকে লক্ষ্য করে দেওয়ালে প্রতীকী অর্থে পাথর মারার বিষয়টি সেখান থেকেই এসেছে’- বিবিসি বাংলাকে বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক ড. মুহাম্মদ ওমর ফারুক। ইসলাম ধর্মমতে, সৃষ্টিকর্তা নবী ইব্রাহীমকে পরীক্ষা করার জন্য তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তুকে কোরবানি বা উৎসর্গ করতে বলেন।
 
তখন ইব্রাহীম তার প্রিয়পুত্র ইসমাইলকে কোরবানি করার সিদ্ধান্ত নেন। ইসমাইলও বাবার সিদ্ধান্ত মেনে নেয়। এরপর পুত্রকে সঙ্গে নিয়ে ইব্রাহীম আরাফাতের খোলা প্রান্তরে চলে যান। সেখানে ইসমাইলকে কোরবানি দিতে যাওয়ার সময় শয়তান কুমন্ত্রণা দিয়ে নবী ইব্রাহীমের কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছিলো। এমন পরিস্থিতিতে ইব্রাহিম তিন স্থানে শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করেন। এই ঘটনার স্মরণেই পরবর্তীতে হজে পাথর নিক্ষেপ করার রীতি চালু হয় বলে মনে করেন মুসলিম পণ্ডিতরা।
 
পশু কোরবানি: মিনায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করার পর পশু কোরবানি করার রীতি রয়েছে। এই রীতি প্রচলনের সঙ্গেও নবী ইব্রাহীমের ইতিহাস জড়িত বলে বিশ্বাস করেন মুসলমানরা। তারা বিশ্বাস করেন সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে নবী ইব্রাহিম তার শিশুপুত্র ইসমাইলকে কোরবানি দিতে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত তেমন কিছু ঘটেনি। ইব্রাহিমের বিশ্বাস ও আনুগত্যে সৃষ্টিকর্তা সন্তুষ্ট হন এবং ইসমাইলের পরিবর্তে একটি পশু কোরবানি হয়। সেই ঘটনাকে স্মরণ করেই হজের তৃতীয় দিনে গরু, ছাগল, মেষ বা উট কোরবানি করা হয় বলে জানিয়েছেন ইসলামি চিন্তাবিদরা। মূলতঃ সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের উদ্দেশ্যে এই কোরবানি করা হয় বলে মনে করেন তারা। একই দিনে ‘ঈদ-উল-আযহা’ বা কোরবানির ঈদও উদযাপন করা হয়ে থাকে।

প্রাক-ইসলামী যুগেও পশু কোরবানির এই রীতি চালু ছিল। ‘কিন্তু তখন কোরবানি করা হতো দেব-দেবীর উদ্দেশ্যে’-বিবিসি বাংলাকে বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক ড. মুহাম্মদ ওমর ফারুক। পরবর্তীতে মক্কায় ইসলাম প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর নবী ইব্রাহীমের প্রবর্তিত কোরবানির রীতি ফিরিয়ে আনা হয় বলে জানান তিনি।

কেশ মুণ্ডন: কেশ মুণ্ডন বা মাথা ন্যাড়া করা হজের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। পশু কোরবানির পর ওই একই দিনে চুল মুণ্ডন করতে হয়। ‘মূলতঃ হজের শুরুতে যে ইহরাম বাঁধা হয়, সেখান থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য যেসব প্রতীকী কাজ করা হয়, সেগুলোরই একটি হলো চুল মুণ্ডন করা’-বিবিসি বাংলাকে বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক ড. মুহাম্মদ ওমর ফারুক। তবে নারী হাজীদের ক্ষেত্রে অবশ্য পুরোপুরি ন্যাড়া হতে হয় না, বরং চুলের আগার কিছু অংশ কেটে ফেললেই চলে।

নবী ইব্রাহীমের সময় থেকেই কেশ মুণ্ড বা চুল কেটে ফেলার এই রীতি চলে আসছে বলে মনে করেন ইসলামী চিন্তাবিদরা। হজ করার ফলে একজন মানুষের ভেতরে যে পরিবর্তন ঘটে, কেশ মুণ্ডন বা চুল কেটে ফেলার মাধ্যমে প্রতীকী অর্থে সেটিই ফুটে ওঠে বলেও মনে করেন তারা। চুল কাটার ফলে হজের ইহরাম ভঙ্গ হয়। ফলে এরপর দাড়ি ছাঁটা এবং হাত-পায়ের নখ কাটতেও আর কোনও বাধা থাকে না বলে জানিয়েছেন মুসলিম পণ্ডিতরা। সূত্র:বিবিসি নিউজ বাংলা।

দৈনিক সরোবর/কেএমএএ