ঢাকা, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১

নির্দেশনা না মানায় ফেসবুক-টিকটককে তলব

সরোবর প্রতিবেদক

 প্রকাশিত: জুলাই ২৫, ২০২৪, ০৭:১৭ বিকাল  

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে চলমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পক্ষ থেকে দফায় দফায় ফেসবুক, টিকটক, ইউটিউবকে নির্দেশনা দেওয়া হলেও সহিংসতামূলক কনটেন্ট ব্লক করেনি এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। নিজেদের প্ল্যাটফর্মে গুজব, অপপ্রচার, উসকানি ও সহিংসতামূলক প্রচার-প্রচারণা ঠেকাতে কী ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে, ফেসবুক-টিকটক কর্তৃপক্ষের কাছে তার জবাব চাইবে বিটিআরসি। তারা জবাব না দিলে অথবা তা সন্তোষজনক না হলে কঠোর ব্যবস্থা নেবে বিটিআরসি।

বিটিআরসির সংশ্লিষ্ট দুটি উইংয়ের (শাখা) দুজন পরিচালক সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া বুধবার (২৪ জুলাই) সংবাদ সম্মেলনেও বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

তিনি বলেন, রবিবার (২৮ জুলাই) বিটিআরসির সঙ্গে বসে ঠিক করা হবে ফেসবুক ও টিকটক কর্তৃপক্ষকে কীভাবে, কী ধরনের চিঠি দেওয়া হবে। বার্তা পাঠানোর পর তাদের তিনদিনের মধ্যে বিটিআরসিতে হাজির হয়ে জবাব দিতে বলা হবে।

কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে- তা নিয়ে জানতে চাইলে পলক বলেন, তাদের জবাব পেলে আমরা তা বিশ্লেষণ করে দেখবো। কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কী রেসট্রিকশন (নিষেধাজ্ঞা) দেওয়া হবে, সেটা তখন ভাবা হবে।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, স্যোশাল মিডিয়া; বিশেষ করে ফেসবুক ও টিকটকের কোনো জবাবদিহি নেই। না বাংলাদেশ সরকারের কাছে আছে, না তাদের অন্য প্রতিষ্ঠানের কাছে আছে। ফেসবুক-টিকটক তাদের যে প্রাইভেসি সেটিংস কিংবা পলিসি গাইডলাইন যেগুলো দিয়ে রাখে, এগুলো একেবারেই তারা নিজেরাও মানে না।

তিনি বলেন, তারা একেক দেশের জন্য একেক ধরনের আচরণ করে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ কেন্দ্র করে বিভিন্ন অপপ্রচার হচ্ছে, সে বিষয়ে তাদের এক ধরনের অবস্থান। ইসরায়েল যে ফিলিস্তিনের ওপর নির্মম অত্যাচার চালাচ্ছে, সেখানে ফেসবুক বা অন্যান্য যে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম আছে, তাদের ভূমিকাটা কী?

অথচ আমাদের এখানে র্যাবের গাড়ি ভাঙচুর করছে, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করছে, পুলিশকে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসীরা হত্যা করছে; সেই ভিডিওউগুলো ছড়িয়ে উসকানি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, সেগুলো ব্লক করা হচ্ছে না। যে গ্রুপগুলো থেকে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক তথ্য-উপাত্ত, ভয়ানক হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলো বিটিআরসি থেকে বারবার বলার পরও তারা ব্লক করছে না। বলেন প্রতিমন্ত্রী।

বিটিআরসির উদ্যোগ কতটা কাজে দেবে, তা নিয়ে সন্দিহান তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ সাবির। তিনি বলেন, কোনো কিছু বন্ধ করে দেওয়া সমাধান নয়। নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারাটা সাফল্য। যতদিন এ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো বাংলাদেশে তাদের কোনো অফিস স্থাপন না করবে, ততদিন তাদের থেকে ভালো রেসপন্স পাওয়া কষ্টসাধ্য।

বিটিআরসিকে আরো তৎপর হতে হবে এবং ব্যবহারকারীদের সচেতন করতে আরো বড় পরিসরে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে বলেও মনে করেন এ তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে চলমান পরিস্থিতি গত ১৮ জুলাই রাত থেকে দেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ ছিল। পাঁচদিন পর ২৩ জুলাই রাতে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু করে সরকার। বুধবার (২৪ জুলাই) রাত থেকে সব জায়গায় ব্রডব্যান্ড চালু করে দেওয়া হয়।

দৈনিক সরোবর/এএস