ঢাকা, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১

‘আজিজ-বেনজীর ইস্যুতে সরকার বিব্রত নয়’

সরোবর প্রতিবেদক  

 প্রকাশিত: মে ২৮, ২০২৪, ০৬:২২ বিকাল  

সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এবং আইজিপি বেনজীর আহমেদ ইস্যুতে সরকার বিব্রত নয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আজিজ-বেনজীর ইস্যুতে সরকার বিব্রত নয়। কারণ, সরকারের বিচার করার সৎসাহস আছে। সরকার তাদের অপরাধ অস্বীকার করে পার পেয়ে যাবার সুযোগ দেয়নি।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাবিশ্বে একজন সৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশে জনপ্রিয়তার মূলে তার সততা ও পরিশ্রম। সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবসময় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।

সরকার পরিবর্তন নিয়ে বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকার পরিবর্তনের উপায় দুটি। একটি হলো গণঅভ্যুত্থান, আরেকটি নির্বাচন। গণঅভ্যুত্থান বিএনপির গলাবাজিতে ছিল, বাস্তবে ছিল না। গণআন্দোলনও তারা করতে পারেনি। যে আন্দোলনে জনগণ সম্পৃক্ত নয় সে আন্দোলন কখনো সফল হয় না। জনগণ সম্পৃক্ত ছিল না বলেই তাদের আন্দোলন বারবার ব্যর্থ হয়েছে। তারা নির্বাচন বয়কট করার পরও ভোটার টার্ন আউট (নির্বাচনে ভোট পড়ার হার) ৪২ শতাংশেরও বেশি। বয়কট করে নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি বিএনপি, জনগণের অংশগ্রহণও ঠেকাতে পারেনি।

তিনি বলেন, বিএনপি নিজেদের অপরাধ ঢাকতে অপপ্রচার করছে এবং অপরাধীদের ক্ষমা করেছে। তাদের আমলে অপরাধীদের কোনোদিন কোনো শাস্তি পেতে হয়নি। আজ তারা বলে তারেক রহমানকে কীভাবে শাস্তি দেবেন?

সেতুমন্ত্রী যোগ করেন, শাস্তি তো তিনি (তারেক রহমান) পেয়ে গেছেন। দুদকের মামলায় নয় বছর কারাদণ্ড হয়েছে। সিঙ্গাপুরে অর্থপাচারের কিছু টাকা বাংলাদেশ ফিরে পেয়েছে। অর্থপাচারের মামলায় তারেক রহমানের সাত বছর সাজা ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা হয়েছে। একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলায় তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। এখন শাস্তির বাস্তবায়নটা করতে হবে। শাস্তি কার্যকর করতে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। সে চেষ্টা অব্যাহত আছে। তার শাস্তি হতেই হবে।

এ দেশে হত্যা ও গুমের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়েছে জিয়াউর রহমানের হাতে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, জিয়াউর রহমানের সময়ে তিন হাজারের বেশি রাজনৈতিক কর্মীকে গুম-খুন করা হয়েছে, যাদের অধিকাংশ আওয়ামী লীগের। এসব কি বিএনপি ভুলে গেছে? এ দেশের মানুষ এখনো সেই হত্যা, গুমের রোমহর্ষক কাহিনি ভুলে যায়নি। আওয়ামী লীগসহ বিরোধীদলের ৬২ হাজার নেতাকর্মী কাদের সময়ে কারাগারে ছিল? যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরোধী অপরাধে কারামুক্তি দিয়েছেন জিয়াউর রহমান। এদের মধ্যে ৭০৩ জন দণ্ডিত আসামি। অনেকে বলেন বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। এটা সত্য নয়।

তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রামে বিএনপি নেতা জামাল উদ্দিনকে গুম করে খুন করেছে বিএনপি। এর বিচার কে করেছে? সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ব্যাপারে দুদক তদন্ত করে বের করছে। দুদক স্বাধীন। এ স্বাধীনতা শেখ হাসিনা দুদককে দিয়েছেন। দুদক সূত্র জানিয়েছে বেনজীর আহমেদের অবৈধ সম্পদের বিষয়ে এখনো তদন্ত হচ্ছে, আরও তদন্ত হবে।

তদন্ত হচ্ছে মানে মামলা হলে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। কোনো অপরাধী শাস্তি ছাড়া পার পাবে না শেখ হাসিনার আমলে। সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ যদি অপরাধী হন তার বিরুদ্ধেও তদন্ত করতে পারবে দুদক। অপরাধী হলে অপরাধের শাস্তি পেতেই হবে। তিনি যেই হোন।

মির্জা ফখরুল এবং বিএনপি নেতারা এখন কথায় কথায় সাবেক আইজিপির দুর্নীতির কথা বলেন। তাদের সময়ে সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদার বিচার করেছেন তারা? এমন প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, রফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার প্রাণনাশের চেষ্টার সঙ্গে জড়িত- এর বিচার কি বিএনপি করেছে? এসপি কোহিনুর, যার হাতে কত রাজনৈতিক কর্মী নির্যাতিত হয়েছেন, অন্তঃসত্ত্বা নারী পর্যন্ত রাজপথে মিছিল করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তার নির্যাতন, দুর্নীতির কথা ঢাকা শহরের মানুষের মুখে মুখে। তার বিচার কি হয়েছে? তাদের আমলে যেসব নেতাকর্মী দুর্নীতি করেছেন, হাওয়া ভবনের দুর্নীতির বিচার কি তারা করেছেন?

তিনি আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দেশে ’৭৫ পরবর্তীকালে একমাত্র ক্ষমতাসীন রাজনীতিক যিনি অপরাধীকে নিজের দলের লোক হলেও ক্ষমা করেন না। এর প্রমাণ তিনি রেখেছেন। বুয়েটে আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছাত্রলীগের কর্মীদের কি ছাড় দেওয়া হয়েছে? বিশ্বজিতের কথা সবার জানা আছে।

দৈনিক সরোবর/এএস