মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে ভুয়া তালিকা
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩, ০৬:৩১ বিকাল

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার একটি কথিত তালিকা। এতে যাদের নাম দেখা যাচ্ছে, তারা ভিসা নিষেধাজ্ঞায় আসার মতো নন। বরং যাদের নাম আসার মতো তারা তথাকথিত এই প্রচারে সুবিধা পাচ্ছেন। তবে কারা এ কাজ করছে তাদের চিহ্নিত করতে কাজ করছে আইন-শৃংখলা বাহিনী।
এখন প্রশ্ন আসছে, মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার এই কথিত তালিকা কারা ছড়াল? কে দিয়েছে এই তালিকা? তালিকার বিশ্বাসযোগ্যতা কি আছে? এর সূত্রই বা কি? , বিভ্রান্তি তৈরি করে কারা সুবিধা নিয়ে চায়?
শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট ঘোষণা দেয়, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িতদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করবে। তবে সেসব বাংলাদেশি নাগরিক কারা তাদের তালিকা প্রকাশ করেনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। বরং তারা জানিয়েছে, নির্দিষ্ট ব্যক্তি যাকে ভিসা নীতির আওতায় আনা হয়েছে তাকে জানানো হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে তালিকা প্রচার করা হচ্ছে তা সঠিক নয় বলে এরই মধ্যে পরিষ্কার করে দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেছেন, সব দেশেরই ভিসানীতি আছে; সবাই যাচাই-বাছাই করেই ভিসা দেয়। বাংলাদেশের উন্নতি অনেকেরই পছন্দ না। তাই দু‘দেশের সম্পর্ক নষ্টের অপচেষ্টা চলছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন জনের নামসহ তালিকায় সাবেক ও বর্তমান আমলা, নির্বাচন কমিশনার, বিচারপতি, সরকার, বিরোধী দল, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর নাম রয়েছে। তথাকথিত এই তালিকা অনেকে শেয়ারও করছেন।
মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার কথিত তালিকাটি নিয়ে ওয়াকিবহাল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা বলছে, স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের স্বার্থে ভুল তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়ছে।
এ বিষয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সংবাদমাধ্যমে বলেন, একটা স্বার্থান্বেষী মহল বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে গুজব ছড়াচ্ছে। নিজেদের স্বার্থে তারা ভুল তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়ছে। মার্কিন সরকার ভিসা নিষেধাজ্ঞার তালিকা প্রকাশ করেনি। বিভিন্ন ব্যক্তি এসব শেয়ার করছে। র্যাব সাইবার মনিটরিং সেলের মাধ্যমে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
এদিকে, ডিএমপির যুগ্ম-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার জানিয়েছেন, এসব গুজবে পুলিশ চিন্তিত নয়। তিনি বলেন, কে কি করছে না করছে এগুলো নিয়ে পুলিশ কিছু ভাবছে না। আমরা আমাদের নিয়মিত কাজে আছি।
নির্বাচনের আগে এই ধরনের গুজবকে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা বলে মনে করছে সিআইডি। পুলিশের এই ইউনিটের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান বলেন, এ ধরনের গুজব আমাদের নজরে এসেছে। যারা ছড়াচ্ছে, তাদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভিসা নিষেধাজ্ঞা সংশ্লিষ্ট ভুয়া তালিকার বিষয়ে ফ্যাক্ট ওয়াচসহ ভুয়া তথ্য যাচাইকারী একাধিক প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, বাংলাদেশে যাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা শুরু হয়েছে তারা নিজে থেকে যদি নিশ্চিত না করেন, তাহলে বাইরের কারও পক্ষে এ সম্পর্কে জানা অসম্ভব। তবে ছড়িয়ে পড়া তালিকায় যাদের নাম রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, তাদের পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে কোনো বিবৃতিও আসেনি।
দৈনিক সরোবর/এএস