ঢাকা, শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের

সরোবর ডেস্ক

 প্রকাশিত: নভেম্বর ২৯, ২০২৪, ০৮:০০ রাত  

বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সংসদে বিবৃতি দিয়েছেন। এতে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুসহ সকল নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের।

লোকসভায় সংসদ সদস্যের প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর বলেছেন, ভারতের সরকার এসব ঘটনার বিষয় গুরুতরভাবে বিবেচনায় নিয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে দিল্লির উদ্বেগ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক দুর্গাপূজা উৎসবের সময় মন্দির ও পূজা মণ্ডপে হামলার খবরও প্রকাশ্যে এসেছে... এই হামলার পর বাংলাদেশ সরকার শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপন নিশ্চিতে সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েনসহ বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা জারি করেছিল।

ভারতের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, সংখ্যালঘুসহ বাংলাদেশের সকল নাগরিকের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষার প্রাথমিক দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের ওপর বর্তায়।

রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) বাংলাদেশের সাবেক পুরোহিত চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার ও হিন্দুদের ওপর কথিত হামলা বৃদ্ধির অভিযোগ ঘিরে চলমান উত্তেজনার মাঝে পরপর দু’দিন অর্থাৎ বৃহস্পতি এবং শুক্রবার ভারতের সংসদে এই বিষয়ে আলোচনা হলো।

এদিকে, একই দিনে (শুক্রবার) চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর গ্রেপ্তার ও সংখ্যালঘুদের নিয়ে দিল্লিতে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে কথা বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। ব্রিফিংয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের বেশিরভাগই বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে জয়সওয়ালকে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করেন।

এ সময় রণধীর বলেন, হিন্দুদের ওপর হামলা নিয়ে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। হিন্দুসহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর হুমকি এবং হামলার বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের কাছে শক্তভাবে সার্বক্ষণিক উত্থাপন করছে ভারত। এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। সব সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা নিশ্চিতের যে দায়িত্ব বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের রয়েছে, সেটি তারা পালন করবে।

তিনি বলেন, আমরা চরমপন্থী বক্তব্যের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে উদ্বিগ্ন। ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও উসকানিমূলক ঘটনাকে শুধু গণমাধ্যমের অতিরঞ্জন বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আমরা বাংলাদেশকে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই...।

গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর গেরুয়া পতাকা উত্তোলনের অভিযোগে হিন্দু নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা হয়। এই মামলায় সোমবার বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করেন।

পরের দিন চট্টগ্রামের একটি আদালতে চিন্ময়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার শুনানি ঘিরে আদালত চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। এ সময় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে আন্দোলনকারীদের হামলায় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে চট্টগ্রামে এক আইনজীবী নিহত হন।

দৈনিক সরোবর/এএস