সেনা অভ্যুত্থানের দুই বছর
জান্তা সরকারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রসহ চার দেশের নতুন নিষেধাজ্ঞা
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২৩, ০৩:১৫ দুপুর

দুই বছর আগে ঠিক এই দিনে গণতন্ত্রের মৃত্যু হয় মিয়ানমারে। ভোট কারচুপির বাহানা তুলে দেশ দখল করে নেয় সামরিক জান্তারা। আটক করা হয় নোবেল বিজয়ী অং সান সু চিসহ দেশটির প্রেসিডেন্ট ও জনগণ নির্বাচিত সব নেতাকে। ওই দিন থেকেই শুরু হয় মার্শাল ল। তবে এ বছর শেষ হবে জরুরি অবস্থা-পুনরায় দেশে ফিরবে নির্বাচন। যদিও তাতে আমেজ নেই, আছে শুধু ভয়। কেননা নির্বাচনি প্রস্তুতি নিচ্ছে সামরিক জান্তারাও। এতে রক্তের বন্যা আবারো বইতে পারে দেশটিতে। পিছিয়ে নেই বিদ্রোহীরাও। শক্ত হাতে মোকাবিলার জন্য দিন দিন ঢাল হয়ে উঠছেন তারা।
২০২০ সালের নভেম্বরে নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে গণতান্ত্রিক নেতা অং সান সু চির দল। ভোটারদের জালিয়াতির অভিযোগ টেনে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সূর্যোদয়ের আগে অভিযান চালিয়ে সব নেতাকে বন্দি করে ক্ষমতা খাবলে নেয় জান্তা সরকার। যদিও তাদের দাবি আদৌ প্রমাণিত হয়নি। আগস্টে পুনরায় হতে পারে মিয়ানমারের নির্বাচন। পুরোদমে প্রস্তুতি নিচ্ছে জান্তা সরকার। এদিকে এমন পরিস্থিতেই নির্বাচন হলে সেখানে দেখা যাবে ভোট জালিয়াতি। জান্তারা যেভাবেই হোক পুনরায় ক্ষমতা দখল করবেন। তার পরিণতি হিসাবে আরও রক্তক্ষরণ দেখার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। অভ্যুত্থানের পর থেকে সহিংসতার কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ।
জাতিসংঘের মতে, জান্তারা বেসামরিকদের ওপর বোমা বিস্ফরণসহ নানাভাবে হামলা চালিয়েছে যা যুদ্ধাপরাধের শামিল। ইয়াঙ্গুনের এক বিদ্রোহী কর্মচারী (সাবেক সরকারি চাকরিজীবী) বলেন, জান্তা আয়োজিত নির্বাচন হচ্ছে, ‘এক চাকাওয়ালা গাড়ির মতোন। এতে যেকোনো রকমের অগ্রগতি হবে না, তা আর বলার অবকাশ নেই।’ থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে, বিদ্রোহী দল ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’য়ের সদস্য লিন লিন জানান, মিয়ানমারের রাজনীতি থেকে জান্তাদের বিতাড়িত করার অভিযানে নির্বাচন কোনো প্রভাব ফেলবে না। নির্বাচিত সরকার না পাওয়া অবধি আমরা আমাদের অস্ত্র সু-উচ্চ রাখব।
জান্তা-আরোপিত জরুরী অবস্থার সমাপ্তি জানুয়ারির শেষের দিকে হবে। সংবিধান অনুযায়ী কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই নতুন নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের সরকার এখনো নির্বাচনের কোনো তারিখ নির্ধারণ করেননি। তবে গত সপ্তাহে সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য দুই মাস সময় দেওয়া হয়।
নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য সামরিক আলোচকরা নির্বাচনি এলাকার জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী, ছোট-বড় আঞ্চলিক দলগুলোকে একত্রিত করার চেষ্টাও চালাচ্ছেন। অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন ইউনিভার্সিটির হটুয়ে হটুয়ে থেইন বলেন, দেশটির অনেক এলাকায়ই ভোট দেওয়া সম্ভব হবে না। যে অঞ্চলগুলো জান্তারা নিয়ন্ত্রণ করছে তারা হয়তোবা জনগণকে ভোট প্রদানে বাধ্য করতে পারে।