বেআইনি ক্লিনিক ও হাসাপাতাল বন্ধ করতে হবে
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩, ০৮:২১ রাত

দেশের ব্যাঙের ছাতার মতো গঁজিয়ে উঠেছে বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসাপাতাল। এর অনেকগুলোর নেই ক্লিনিক খোলার অনুমতি। তারপরও বছরের পর বছর ধরে চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে, এসব ক্লিনিকি ও হাসাপাতাল। রোগীদের সুচিকিৎসার বদলে প্রতারণার মাধ্যমে রোগীদের কাছ খেকে টাকা খসিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে।
খোদ রাজধানী ঢাকায় এমন অনেক বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতাল আছে, যার বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ থাকার পরেও সরকারি কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয় না।
মজার বিষয় হলো-বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতাল বহু ক্ষেত্রে বেনামে বা সরাসরি মালিক হয়ে থাকেন সরকারি অনেক চিকিৎসক এবং মালিক না হলেও এসব ক্লিনিকে রোগী দেখার ফলে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিতে এগিয়ে আসে না।
বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মানুষের দোরগোড়ায় উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু এতে সরকারি কিছু চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের অসাধু ব্যক্তিদের কারণে বাধার মুখে পড়ছে।
বর্তমানে ডেঙ্গুজ্বর প্রকোপ আকার নিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, সরকারি হাসাপাতালের চিকিৎসার মান যতটা উন্নতি করবে বলে আশা করা গিয়েছিলো, সেটা ঘটেনি।
রাজধানীর সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুজরের রোগীদেরও চাপ বেশি থাকায় অনেক ক্ষেত্রে সেখানে সঠিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যাচ্ছে না। এই ফাঁকে বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালের ওপর ভরসা করছেন ডেঙ্গু রোগীরা। আর এতে ক্লিনিকগুলোর ব্যবসা রমরমা হয়ে উঠেছে। সারা বছরের ব্যবসা যেন ১৫ দিনেই করে নিচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে তাই মনে হচ্ছে।
ডেঙ্গু রোগীর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সরকারি হাসাপাতালে যে দুর্ভোগের শিকার হতে হয়, তা ভুক্তভোগীমাত্রই জানেন। অনেক সময় কম টাকার আশায় গরীব অসহায় মানুষ সরকারি হাসাপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে গিয়ে দেরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা রিপোর্ট পেতে রোগীর মরণাপন্ন অবস্থায় গিয়ে ঠেকছেন।
পাশাপাশি ছুটির দিনে সরকারি হাসাপাতালে বেশির ভাগ বিভাগ বন্ধ থাকে। চিকিৎসক খুঁজে পাওয়া যায় না। জেলা সদর ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালগুলোর অবস্থা আরো ভয়াবহ। ছুটির দিন হাসপাতাল বিরণভুমিতে পরিণত হয়। এ কারণে সরকার প্রধান মানুষের দোড়গোড়য় উন্নত স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতের সংকল্প করলেও পেরে উঠছেন না।
আমরা মনে করি, চিকিৎসকদের মধ্যে মানবিকবোধটি জাগ্রত হওয়া উচিত। মোটা বেতনে তাদের বিলাসী জীবনের পেছনে সাধারণ মানুষের অর্থে সম্ভব হচ্ছে। মনে হয়, এটি দেশের চিকিৎসকরা ভুলে যান। তবে বিষয়টি সরকার অনেকবারই এটি তাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
যাই হোক, বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসাপাতাল যেভাবে মচ্ছবের মতো গড়ে উঠেছে এর বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদফতর অভিযানে নামছে। আগেও নেমেছিলো। অভিযান কার্যকরও হয়েছিলো।
জানা গেছে, রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির জানান, সোমবার থেকে সারা দেশের হাসপাতালে আবারও অভিযান পরিচালনা করবে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
পরিশেষে আমরা বলবো, সরকারি চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি বেসরকারি চিকিৎসা সেবা খারাপ কিছু নয়। বরং বেসরকারি উদ্যোগে দেশের স্বাস্থ্য সেবার পরিসর যেমন বাড়িয়ে তোলা সম্ভব, তেমনই স্বাস্থ্য সেবার মানও বাড়ানো সম্ভব। দেশের অনেক নামি-দামি ক্লিনিক ও হাসপাতাল আছে, যেগুলো সুনাম অর্জন করেছে, রোগীদের আস্থায় পরিণত হয়েছে। কিন্তু এর ফাঁকে যেসব ক্লিনিক পেশাদারিত্ব দেখাতে ব্যর্থ তাদের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
দৈনিক সরোবর/এএস