ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১

স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গঠন করুন

সম্পাদকের কলম

 প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২৪, ১০:৪০ দুপুর  

মানুষের মধ্যে দেশপ্রেম ও মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করা গেলে দেশকে ইতিবাচকভাবে বদলানো সম্ভব। এক্ষেত্রে বৈষম্যহীনভাবে মানুষকে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। বৈষম্য শব্দটি একটা সময় কম ব্যবহার হতো। তবে এখন বৈষম্য শব্দটি এখন মানুষের মুখে মুখে। বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। এ দেশ স্বাধীন হয়েছে অনেক জীবনের বিনিময়। অথচ স্বাধীনতার পর থেকে আমরা দেখে আসছি যারাই রক্ষক, তারাই ভক্ষকের ভূমিকা পালন করেছে। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের পরিপূর্ণ সুফল পেতে হলে যারা দেশ পরিচালনা করেন, তাদের শাসক নয়; সেবকের মনোভাব নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হয়। ভুলে গেলে চলবে না, জনগণই সব ক্ষমতার উৎস। জনসাধারণের কল্যাণের কথা মাথায় রেখে সব কর্মপরিকল্পনা তাদের গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু যারাই রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন, তারা কথাটি স্মরণে রাখেন না। ফলে এক পর্যায়ে মাঝে মধ্যে জনগণকেই তা মনে করিয়ে দিতে হয়। তাই এখন যারাই সরকার গঠন করবেন, তাদের রাষ্ট্রকে ভালোভাবে পরিচালনা করতে হবে এবং নিজেদের দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকতে হবে। সহিংসতা কারো জন্য কল্যাণকর নয়; সম্পদ ও লুট, ভাংচুর, সহিংসতা কোনো সমাধান নয়।
 
বলার অপেক্ষা রাখে না, আওয়ামী লীগ দীর্ঘ বছর সরকারের ছিল। একনায়কতন্ত্র, একদলীয় কায়দায় জাতীয় নির্বাচন দেয়ায় অনেকে ভোট দিতে পারেননি। কোনোভাবেই ভালো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। এর বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে অভ্যুত্থান। এ জন্য সব বিষয়ই সংস্কার দরকার। প্রথমেই দরকার রাজনীতির সংস্কার। কারণ রাজনৈতিক দলের ব্যানারে, রাজনৈতিক ক্ষমতা দেখিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়। তাই রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরও সংস্কার সময়ের দাবি। সমাজে যখন মানবিক বোধ কমে যায় এবং নানা রকম অনাচার বাড়ে; তখন ওই সমাজকে সুস্থ  স্বাভাবিক বলা যায় না। আমরা এ রকম একটি অসুস্থ সময় পার করছি। 
 
বিজ্ঞানের কল্যাণে অর্থনীতির ব্যাপক যে উন্নতি হয়েছে; সেখানে এখন পৃথিবীর যেখানেই হোক, খেয়ে-পরে বাঁচার মতো একটি অবস্থা তৈরি হয়েছে। কিন্তু মানবিক গুণাবলি ও মূল্যবোধ অনেকটাই লোপ পেয়েছে। এ থেকে উত্তরণ একেবারে হবে বলে মনে হয় না। তাই আগে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। তাহলেই রাজনীতি, রাজনৈতিক দল, অফিস-আদালত ও রাষ্ট্র সবকিছুই পরিবর্তন হবে।  এই দুঃসময়ে রাজনৈতিক দলগুলো শুরু করুক সহমর্মিতা। আমাদের প্রত্যাশা, সবাই সহমর্মী হয়ে সহানুভূহতির হাত বাড়িয়ে দিয়ে একটি সুন্দর, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র গঠন করুক।