অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ
স্বচ্ছতা আর জবাবদিহিতার ব্যবস্থা নিশ্চিত হোক
প্রকাশিত: আগস্ট ০৮, ২০২৪, ০৬:২৯ বিকাল
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারে করে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। তার দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সরকারের পতনের পর তিন দিন ধরে দেশে কার্যত কোনো সরকার নেই। ফলে আজ রাতে শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে দেশবাসীর উদ্দেশে ড. ইউনূস বলেছেন, কোনো প্রকার ভুলের কারণে আমাদের এই বিজয় যেন হাতছাড়া হয়ে না যায়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে অন্য কারা থাকছেন, এ ব্যাপারে সঠিকভাবে কিছু জানা যাচ্ছে না। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ১৫ জনের নামের একটি তালিকা তৈরি করেছে বলে জানা গেছে। গত এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো নতুন এক নেতা পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ছাত্র আন্দোলনকারীদের চাপের সাথে সেনাবাহিনীর অনুরোধে সাড়া দেন এবং হাসিনার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার একদিন পর দেশের সংসদ ভেঙে দেন। এতে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে নতুন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পথ সুগম হয়। অতীতে ক্রমাগত হাসিনার ক্রোধের শিকার হয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাওয়া মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশে অতীতে কাল্পনিক নির্বাচন হয়েছে। এখন আমাদের একটি বাস্তব নির্বাচন দরকার।
তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বাস্তব পদক্ষেপ নেয়। তারা জেনেশুনে জ্রকঠিন প্রত্যয় নিয়ে সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়ে যায়, দেশবাসীকে বাঁচানোর লক্ষ্যে উন্নয়ন ঘটায়, সর্বোপরি একশ বছরের পরের বাংলাদেশ নিয়ে স্বপ্ন দেখে এবং স্বপ্ন দেখায়। তারা চায় দেশের মানুষ বিনা বাধায় চলতে থাকুক, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হোক, শিক্ষার পরিবেশ নির্বিঘ্ন থাকুক আর দেশের মর্যাদা আকাশছোঁয়া হোক। জনগণের শান্তি বিনষ্ট করলে, বিনা কারণে জনজীবনে যন্ত্রণা সৃষ্টি করলে, রাষ্ট্রক্ষমতার অপব্যবহার করলে তা তারা কখনা মেনে নেয় না। তাদের প্রত্যাশা হয়েছে দিগন্ত বিস্তৃত।
সবাই জানেন, নতুন সরকারের চলার পথটিতে চ্যালেঞ্জ অনেক। বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেই এ সরকারকে এগিয়ে যেতে হবে। তাদের জোর দিতে হবে সুশাসনের ওপর। কঠোর হস্তে দমন করতে হবে সন্ত্রাস, রাহাজানি। প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আর জবাবদিহিতার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া দুর্নীতি নির্মূল করা জরুরি। জনগণের মন থেকে ভয়-আতঙ্ক দূর করার ব্যবস্থা নিতে হবে। গ্রামে-গঞ্জে-শহরে সর্বত্র মানুষ চায় শান্তির সুবাতাস সৃষ্টি হোক, সাধারণ মানুষ নির্ভয়ে দরজা খোলা ঘরে ঘুমাতে পারুক, উঠতি বয়সের মেয়েটি নির্ভয়ে-নির্ঝঞ্ঝাটে স্কুল-কলেজে আসা-যাওয়া করুক, শহরে-গ্রামে সর্বত্র বখাটেপনা চিরতরে নির্মূল হবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।