ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৬ আশ্বিন ১৪৩০

২৪ বছর পর মেয়ে খুঁজে পেলেন বাবাকে 

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

 প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩, ০৫:৫৬ বিকাল  

ছবিঃ প্রতিনিধি

ফেসবুকের কল্যাণে ২৪ বছর পর বাবা মো. আলমগীর হোসেনের দেখা পেলেন তানিয়া। একটি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বাবার সন্ধান পান তিনি। পরে দুই ঘণ্টার আলাপচারিতায় তারা গোটা জীবন ধরে জমানো অজস্র কথা বলেন একে অন্যকে।

এক জেলায় থেকেও ২৪ বছর ধরে বাবার দেখা পাননি মোছা. তানিয়া আক্তার (২৪)। তিনি জানতেনই না তার বাবা জীবিত আছেন।

জানা গেছে, শুক্রবার বাবা-মেয়ের এই দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়েছেন ‘ভবঘুরে’ নামে ফেসবুক পেজের অ্যাডমিন ইকবাল আহমেদ।

এদিন দুপুরে তানিয়া ও তার বাবা আলমগীর হোসেনের দেখা হয় হবিগঞ্জ শহরের কালিবাড়ি রোডে সৌদিয়া রেস্তোরাঁয়। ‘ভবঘুরের’ অ্যাডমিন ইকবাল আহমেদ সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

তানিয়ার বাবা আলমগীর হোসেন হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার দত্তপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। আর তানিয়ার ২৪ বছর কেটেছে পার্শ্ববর্তী মাধবপুর উপজেলার খান্দুরা গ্রামে তার নানাবাড়িতে।

মেয়েটির জন্মের অল্পদিন পরেই তার বাবা আলমগীর হোসেন ও মা আফরোজা বেগমের বিচ্ছেদ হয়। এরপর দুজন নতুন সংসারে গেলে তানিয়া বেড়ে ওঠেন তার নানা মাজুম খানের তত্ত্বাবধানে।

তিনি বলেন, বাবা-মা আলাদা হওয়ার পর মায়ের সঙ্গে প্রায়ই দেখা হতো। কিন্তু বাবা জীবিত আছেন কি না তা জানতে পারিনি নিয়মের যাঁতাকলে পরে। নিজের মতো করে বাবাকে খুঁজেছি হন্যে হয়ে। কিন্তু পাইনি। 

তানিয়া আরো বলেন, দুই সপ্তাহ আগে ‘ভবঘুরে’ পেজের ইকবাল আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং বাবার যানবাহনে বিনামূল্যে আরোহণের একটি পরিচয়পত্র তাকে দিই। সেই সূত্র থেকে ওই ভাইটি আমার বাবার সন্ধান বের করে দিয়েছেন। 

এখন থেকে বাবার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবেন কি না জানতে চাইলে তানিয়া বলেন, আমার স্বামী ও দুই সন্তান রয়েছেন। স্বামীর অনুমতি নিয়ে বাবার সঙ্গে দেখা করেছি। আগামীতেও স্বামীর সঙ্গে কথা বলে তারপর সিদ্ধান্ত নেব। 

এসময় নানার সহযোগিতায় দাখিল পাস করেন জানিয়ে তানিয়া তার নানা ও স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

‘ভবঘুরে’ পেজের এডমিন ইকবাল বলেন, রেস্তোরাঁর কেবিনে বাবা-মেয়ে দুই ঘণ্টা সময় ধরে আলাপচারিতায় মগ্ন ছিলেন। তারা সেখানে খাওয়া-দাওয়া করেছেন। বার বার কেঁদে দিয়েছেন একে অন্যের দিকে তাকিয়ে। পরে তানিয়া মাধবপুর উপজেলায় তার স্বামীর বাড়ি ও আলমগীর হোসেন তার নিজের বাড়ি চলে যান। 

বাবা-মেয়ের এই দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটানোর মধ্য দিয়ে ইকবাল নিজেও আনন্দিত হয়েছেন বলে জানান।

দৈনিক সরোবর/এএস